পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টি–টোয়েন্টি ম্যাচে বাংলাদেশের হার।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ সামনে রেখে প্রস্তুতির অংশ হিসেবে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলছে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। সিরিজের প্রথম ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয় লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে, যেখানে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ছিল হতাশাজনক। পাকিস্তানের কাছে বাংলাদেশ হারে ৩৭ রানে।
শুরুর ধাক্কা দিয়েও কাঙ্ক্ষিত ফল আনতে ব্যর্থ বাংলাদেশ
ম্যাচের শুরুটা হয়েছিল ভালো বোলিং দিয়ে। পাকিস্তান টস হেরে ব্যাটিং শুরু করলে, প্রথম দুই ওভারেই তাদের দুই ব্যাটারকে আউট করে দেন মেহেদী হাসান ও শরীফুল ইসলাম। শরীফুল এই ম্যাচে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ৫০তম উইকেট শিকার করেন।
মাত্র ৫ রানে ২ উইকেট হারানো পাকিস্তান তখন বেশ চাপে ছিল। সেই চাপ থেকে দলকে উদ্ধার করেন মোহাম্মদ হারিস। যদিও ১৮ বলে ৩১ রান করে আউট হন তিনি, তার দেখানো ছন্দে সালমান আগা ও হাসান নেওয়াজ দ্রুত রান তুলতে থাকেন।
বাংলাদেশের বোলিংয়ের কিছু ভালো মুহূর্ত
তানজিম হাসান হারিসকে আউট করে কিছুটা স্বস্তি আনেন। এরপর হাসান মাহমুদ ভাঙেন সালমান ও হাসানের জুটি। তবে পাকিস্তানের রান তোলার গতি তাতে খুব একটা কমেনি।
বোলিংয়ে চমক দেখান শামীম হোসেন। সাধারণত ব্যাটিং অলরাউন্ডার হলেও, এই ম্যাচে তার প্রথম দুই ওভারে মাত্র ১১ রান আসে। তৃতীয় ওভারে পান টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের প্রথম উইকেট—খুশদিল শাহকে আউট করেন। এরপর রিশাদ হোসেন আউট করেন হাসান নেওয়াজকে।

কিন্তু ইনিংসের শেষ দিকে শাদাব খান ও ফাহিম আশরাফ ঝড়ো ব্যাটিং করেন। শেষ ৩ ওভারে তারা তোলে ৪৩ রান। ফলে পাকিস্তান দাঁড় করায় বড় স্কোর—২০ ওভারে ২০১ রান ৭ উইকেটে।
বাংলাদেশের রান তাড়ায় বড় জুটি না হওয়াই বিপর্যয়ের কারণ
এই রান তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশের শুরুটা ছিল হতাশাজনক। দ্বিতীয় ওভারেই হাসান আলীর বলে আউট হন ওপেনার পারভেজ হোসেন। হাসান আলী ছিলেন ম্যাচের নায়ক—এক বছর পর দলে ফিরে মাত্র ৩০ রান দিয়ে ৫টি উইকেট তুলে নেন।
তানজিদ হাসান পাওয়ার প্লেতে কিছুটা লড়াই করেন, ১৭ বলে ৩১ রান করে বোল্ড হন হাসান আলীর বলেই। এরপর বাংলাদেশের ইনিংস কিছুটা গতি পায় লিটন দাসের ব্যাটে। অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে দারুণ কিছু শট খেলেন তিনি, করেন ৩০ বলে ৪৮ রান। কিন্তু সঙ্গী তাওহিদ হৃদয় ছিলেন একেবারেই ছন্দহীন—২২ বল খেলে মাত্র ১৭ রান করতে পারেন তিনি।
লিটন আউট হওয়ার পর বাংলাদেশের ইনিংসে নেমে আসে ধস। একে একে আউট হন হৃদয়, শামীম হোসেন, রিশাদ হোসেন। জাকের আলী কিছুটা চেষ্টা করলেও (৩৬ রান), দলের হার ঠেকানো যায়নি। বাংলাদেশ ২০ ওভারও টিকতে পারেনি—১৯.২ ওভারে ১৬৪ রানেই অলআউট হয়ে যায়।
ম্যাচের নায়ক হাসান আলী ও শাদাব খান
পাকিস্তানের হয়ে হাসান আলী ছিলেন দুর্দান্ত—৫ উইকেট নিয়েছেন তিনি। তবে ‘ম্যান অব দ্য ম্যাচ’ নির্বাচিত হন শাদাব খান, যিনি ৪৮ রান করার পাশাপাশি বল হাতে ২ উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
পাকিস্তান: ২০ ওভারে ২০১/৭
(সালমান আগা ৫৬, শাদাব খান ৪৮, হাসান নেওয়াজ ৪৪)
বাংলাদেশ: ১৯.২ ওভারে ১৬৪/১০
(লিটন দাস ৪৮, জাকের আলী ৩৬, তানজিদ হাসান ৩১)
ফল: পাকিস্তান ৩৭ রানে জয়ী
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: শাদাব খান
সিরিজের অবস্থা: পাকিস্তান ১–০ তে এগিয়ে
এই ম্যাচে বাংলাদেশের ব্যাটিং ও ফিল্ডিং দুটোতেই কিছু দুর্বলতা চোখে পড়েছে। তবে সিরিজে এখনো দুই ম্যাচ বাকি আছে। পরের ম্যাচগুলোতে ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ থাকছে লিটন দাসদের সামনে।

Pingback: আইপিএলে বিশাল বড় অঙ্কের জরিমানা - bdamargoal.com