কোন নিয়মে এক দেশের ফুটবলার অন্যদেশের হয়ে খেলতে পারে
এক দেশে জন্ম নেওয়া ফুটবলার অন্য দেশের হয়ে খেলার জন্য ফিফার কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। এই নিয়মগুলি মূলত খেলোয়াড়ের জাতীয়তা পরিবর্তন এবং আন্তর্জাতিক ফুটবলে অংশগ্রহণের যোগ্যতা নির্ধারণ করে। নিচে মূল নিয়মগুলো সহজ ভাষায় তুলে ধরা হলো:

জাতীয়তা পরিবর্তনের ভিত্তি:
একজন ফুটবলার নিম্নলিখিত কারণে অন্য দেশের জাতীয় দলের হয়ে খেলতে পারে:
জন্মস্থান: যদি খেলোয়াড় অন্য কোনো দেশের ভূখণ্ডে জন্মগ্রহণ করে থাকে।
পিতামাতা বা দাদা-দাদী: যদি খেলোয়াড়ের বাবা, মা, দাদা অথবা দাদী অন্য কোনো দেশে জন্মগ্রহণ করে থাকেন। তবে এক্ষেত্রে সাধারণত সরাসরি জৈবিক সম্পর্ক (biological) বিবেচিত হয়, দত্তক (adoption) নয়।
দীর্ঘমেয়াদী বসবাস: যদি খেলোয়াড় ১৮ বছর বয়স হওয়ার পর কমপক্ষে পাঁচ বছর ধরে অন্য কোনো দেশে একটানা বসবাস করে থাকে। কিছু ক্ষেত্রে, যদি খেলোয়াড় ১০ বছর বয়সের আগে থেকে কমপক্ষে তিন বছর ধরে কোনো দেশে বসবাস করে থাকে, তাহলেও সে দেশের হয়ে খেলতে পারে।
আগে অন্য দেশের হয়ে খেলার নিয়ম:
যদি কোনো খেলোয়াড় আগে অন্য কোনো দেশের জাতীয় দলের হয়ে খেলে থাকে, তাহলেও কিছু শর্ত পূরণ করে অন্য দেশের হয়ে খেলতে পারবে:
অনূর্ধ্ব-২১ পর্যায়ে খেলা: যদি খেলোয়াড় ২১ বছর বয়স হওয়ার আগে পর্যন্ত তার আগের দেশের জাতীয় দলের হয়ে শুধুমাত্র অনূর্ধ্ব-২১ (youth level) পর্যায়ে খেলে থাকে এবং কোনো সিনিয়র (senior level) ম্যাচে অংশগ্রহণ না করে থাকে, তাহলে সে অন্য দেশের জাতীয় দলের হয়ে খেলতে পারবে যদি তার নতুন দেশের জাতীয়তা থাকে।
তিনটির বেশি সিনিয়র ম্যাচ না খেলা: যদি খেলোয়াড় তার আগের দেশের সিনিয়র দলের হয়ে তিনটি বা তার কম প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে অংশগ্রহণ করে থাকে এবং সেই ম্যাচগুলো ২১ বছর বয়স হওয়ার আগে খেলে থাকে, এবং যদি সেই ম্যাচগুলো কোনো বড় আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টের (যেমন বিশ্বকাপ, মহাদেশীয় চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল) অন্তর্ভুক্ত না হয়, তাহলে সে অন্য দেশের হয়ে খেলতে পারবে যদি তার নতুন দেশের জাতীয়তা থাকে এবং আগের দেশের হয়ে শেষ ম্যাচ খেলার পর কমপক্ষে তিন বছর অতিবাহিত হয়ে থাকে।
নতুন জাতীয়তা ধারণের সময়: খেলোয়াড়ের নতুন দেশের জাতীয়তা তার আগের দেশের হয়ে প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার সময় থাকতে হবে।
ভারতের বিরুদ্ধে ম্যাচ ড্র করার পুরস্কারে হামজারা
নারীদের বিশ্বকাপে দুইজন বাংলাদেশি আম্পায়ার
একবারই সুযোগ:
সাধারণত, একজন খেলোয়াড় একবারই জাতীয় দল পরিবর্তন করার সুযোগ পায়।
আবেদন প্রক্রিয়া:
জাতীয়তা পরিবর্তন করতে ইচ্ছুক খেলোয়াড়কে ফিফার কাছে লিখিত আবেদন করতে হয়। ফিফার প্লেয়ার্স স্ট্যাটাস কমিটি এই আবেদনের ওপর সিদ্ধান্ত নেয়।

বিশেষ দ্রষ্টব্য:
ফিফা সময়ে সময়ে এই নিয়মগুলোতে পরিবর্তন আনতে পারে।
দুটি দেশের ফুটবল ফেডারেশন নিজেদের মধ্যে কোনো বিশেষ চুক্তি করে থাকলে, সেক্ষেত্রে কিছু নিয়মের ভিন্নতা দেখা যেতে পারে।
উপরের নিয়মগুলো একজন ফুটবলারের এক দেশে জন্ম নেওয়া সত্ত্বেও অন্য দেশের জাতীয় দলের হয়ে খেলার সুযোগ তৈরি করে। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রেই খেলোয়াড়কে ফিফার নির্ধারিত যোগ্যতা পূরণ করতে হয়।

Pingback: মাদাম তুসোয় জাদুঘরে কিলিয়ান এমবাপে - bdamargoal.com