ম্যালওয়্যার কী, কি ভাবে ডিভাইস সুরক্ষায় রাখবেন
ম্যালওয়্যার কী?
সহজ ভাষায় বলতে গেলে, ম্যালওয়্যার হলো খারাপ সফটওয়্যার। এগুলো তৈরি করা হয় আপনার কম্পিউটার, ফোন বা অন্য কোনো ডিভাইসের ক্ষতি করার জন্য। ভাইরাস, ট্রোজান, স্পাইওয়্যার, ওয়ার্ম – এগুলো সবই ম্যালওয়্যারের একেকটা রূপ। এদের মূল কাজ হলো আপনার ক্ষতি করা অথবা আপনার ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করা।
ম্যালওয়্যার ছড়াচ্ছে পিডিএফ ফাইলের মাধ্যমে!
ম্যালওয়্যার কী কী ক্ষতি করতে পারে?
ম্যালওয়্যার মূলত আপনার ক্ষতি করার উদ্দেশ্যেই তৈরি করা হয়। কিছু সাধারণ উদ্দেশ্য হলো:
- আপনার ব্যক্তিগত তথ্য (যেমন – ছবি, ভিডিও, পাসওয়ার্ড) চুরি করা।
- আপনার ডিভাইসটিকে ব্যবহার করে অন্য কোনো খারাপ কাজ করা (যেমন – অন্য কম্পিউটারে ভাইরাস ছড়ানো)।
- আপনার ডিভাইসটিকে সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ করা।
- আপনার ডিভাইসটিকে জিম্মি করে টাকা চাওয়া।
- কীভাবে আপনার ডিভাইসে ম্যালওয়্যার ঢুকতে পারে?
বিভিন্নভাবে ম্যালওয়্যার আপনার ডিভাইসে প্রবেশ করতে পারে, যেমন:
অজানা ফাইল ডাউনলোড করলে: আপনি যদি এমন কোনো ফাইল ডাউনলোড করেন যেটার উৎস আপনি জানেন না, তাহলে সেটির সাথে ম্যালওয়্যার আসতে পারে।
ক্ষতিকর ওয়েবসাইটে গেলে: কিছু ওয়েবসাইট ম্যালওয়্যার দিয়ে ভর্তি থাকে। সেই ওয়েবসাইটে ঢুকলেই আপনার ডিভাইসে ম্যালওয়্যার চলে আসতে পারে।

ভুয়া লিঙ্কে ক্লিক করলে: অনেক সময় ইমেইল বা মেসেজের মাধ্যমে ভুলভাল লিঙ্ক পাঠানো হয়। সেগুলোতে ক্লিক করলে ম্যালওয়্যার ডাউনলোড হতে পারে।
কিছু পরিচিত ম্যালওয়্যারের নাম ও তাদের কাজ:
ভাইরাস: এটা অনেকটা রোগের ভাইরাসের মতো। যতক্ষণ না আপনি কোনো ভাইরাসযুক্ত ফাইল খোলেন বা চালান, ততক্ষণ এটা চুপচাপ থাকে। একবার চালু করলে, এটা আপনার ডিভাইসের অন্যান্য ফাইলকেও সংক্রমিত করতে পারে। সাধারণত ইন্টারনেট থেকে ফাইল ডাউনলোডের মাধ্যমেই ভাইরাস ছড়ায়।
ট্রোজান: এদেরকে ছদ্মবেশী বলা যায়। এরা ভালো কোনো অ্যাপের মতো সেজে আপনার ডিভাইসে ঢোকে। আপনি বিশ্বাস করে সেটা চালু করলেই এরা তাদের আসল কাজ শুরু করে – আপনার গোপন তথ্য চুরি করে এবং হ্যাকারদের আপনার ডিভাইসে ঢোকার রাস্তা তৈরি করে দেয়।
র্যান্সোমওয়্যার: এটা খুবই ভয়ংকর ম্যালওয়্যার। এটা আপনার ডিভাইসকে তালাবন্ধ করে দেয় এবং আপনার কাছে টাকা চায়। টাকা না দিলে আপনার সব ডেটা নষ্ট করে দেওয়ার হুমকিও দেয়।
স্পাইওয়্যার: এদের কাজ হলো গোপনে আপনার উপর নজর রাখা। আপনি কোন ওয়েবসাইটে যাচ্ছেন, কী টাইপ করছেন – এসব তথ্য এরা চুরি করতে পারে। এমনকি আপনি যখন কোনো ওয়েবসাইটে লগইন করেন, আপনার ইউজারনেম ও পাসওয়ার্ডও এরা জেনে নিতে পারে।
ওয়ার্ম: ভাইরাস যেমন কোনো ফাইল ওপেন না করলে ছড়ায় না, ওয়ার্ম তেমন না। এটা নেটওয়ার্কের মাধ্যমে খুব সহজে ছড়িয়ে পড়তে পারে। একবার নেটওয়ার্কে ঢুকলে এটা নিজে থেকেই কাজ শুরু করে দেয়। আপনার ডিভাইসের গতি কমিয়ে দিতে পারে, এমনকি অপারেটিং সিস্টেমও বন্ধ করে দিতে পারে। আর এটা আপনার ডিভাইসে অ্যান্টিভাইরাসও ইন্সটল করতে বাধা দেয়।
এসব ম্যালওয়্যার থেকে বাঁচার উপায়:
এসব ক্ষতিকর ম্যালওয়্যার থেকে বাঁচতে হলে কিছু জিনিস মনে রাখতে হবে:
আপনার ডিভাইসের অপারেটিং সিস্টেম (যেমন – উইন্ডোজ, অ্যান্ড্রয়েড) সবসময় আপডেট রাখুন।
আপনার ডিভাইসে ভালো মানের অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার ইনস্টল করুন এবং সেটা নিয়মিত আপডেট করুন। উইন্ডোজ এবং অ্যান্ড্রয়েড ফোনে সাধারণত বিল্ট-ইন অ্যান্টিভাইরাস থাকে, তবে প্রয়োজন মনে করলে অন্য ভালো অ্যান্টিভাইরাসও ব্যবহার করতে পারেন।
