মাঠে রেফারিরা অনিরাপদ কেন
দেশের ফুটবল রেফারিদের সময়টা মোটেও ভালো যাচ্ছে না। তারা মাঠের বাইরে ন্যায্য পারিশ্রমিকের জন্য আন্দোলন করছেন, আবার মাঠের ভেতরে প্রায়ই মারধর ও খারাপ আচরণের শিকার হচ্ছেন। গত দুই সপ্তাহে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের দ্বিতীয় স্তর চ্যাম্পিয়নশিপ লিগের (বিসিএল) তিনটি খেলায় রেফারি মারধরের শিকার হয়েছেন।
সবশেষ ঘটনাটি ঘটেছে গত রবিবার সিটি ক্লাব ও বাফুফে এলিট একাডেমির ম্যাচে। রেফারি জিম এম চৌধুরী নয়ন একটি বিতর্কিত পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেওয়ায় মারধরের শিকার হন। রেফারি নয়ন জানান, সিটি ক্লাবের কিছু কর্মকর্তা, খেলোয়াড় ও সমর্থক তাঁকে মেরেছেন। তাঁর দেওয়া পেনাল্টির সিদ্ধান্তটি সঠিক ছিল বলেও তিনি দাবি করেন।
এই চ্যাম্পিয়নশিপ লিগের খেলাগুলো হচ্ছে পূর্বাচলের জলসিঁড়ি প্রকল্পের ফর্টিজ মাঠে। সিটি ক্লাব ও বাফুফে এলিট একাডেমির ম্যাচের শেষ দিকে রেফারি নয়ন সিটি ক্লাবের বিপক্ষে পেনাল্টি দেন। সেই পেনাল্টি থেকে গোল করে এলিট একাডেমি খেলায় সমতা আনে। খেলা শেষ হওয়ার বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গেই কিছু লোক মাঠে ঢুকে রেফারি নয়নকে কিল-ঘুষি মারতে শুরু করে।

দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে রেফারিং করছেন নয়ন। অনেক আন্তর্জাতিক ম্যাচেও তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন। কিন্তু এমন বাজে অভিজ্ঞতা তাঁর আগে কখনো হয়নি। তিনি এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চান এবং ভবিষ্যতে কোনো রেফারি যেন এমন পরিস্থিতির শিকার না হন, সেই বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানান।
তবে সিটি ক্লাবের টিম ম্যানেজার আমির হোসেনের বক্তব্য ভিন্ন। তিনি বলেন, রেফারি যে পেনাল্টি দিয়েছেন, সেটি কোনোভাবেই পেনাল্টি ছিল না। এমনকি রেফারি খেলা শেষ হওয়ার আগেই বাঁশি বাজিয়ে দিয়েছেন বলেও তিনি অভিযোগ করেন। রেফারিকে মারধরের বিষয়ে তিনি বলেন, সিটি ক্লাবের সমর্থকেরা এই কাজ করেছেন, তাদের খেলোয়াড় বা কর্মকর্তারা মারধর করেননি।
এর আগে গত ৩০ এপ্রিল একই মাঠে পিডব্লিউডি ও ওয়ারী ক্লাবের ম্যাচেও খারাপ ঘটনা ঘটে। বিরতির সময় কয়েকজন রেফারিকে ঘিরে খারাপ আচরণ করে এবং একজন সহকারী রেফারির কাছ থেকে পতাকা কেড়ে নেয়। এছাড়াও, গাজীপুরে ফরাশগঞ্জ এবং পিডব্লিউডি ম্যাচেও রেফারি হামলার শিকার হয়েছিলেন।
এসব ঘটনা নিয়ে বাফুফের লিগ কমিটির ডেপুটি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন জানান, ম্যাচ কমিশনারদের প্রতিবেদন পাওয়ার পর শৃঙ্খলা কমিটি জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। বাফুফের সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেনও একই সুরে বলেন, তিনটি ঘটনাই শৃঙ্খলা কমিটির কাছে গেছে এবং তারা দ্রুতই উপযুক্ত পদক্ষেপ নেবে।
