স্মার্টফোনকে সাইবার হামলা থেকে রক্ষা করতে মানতে হবে ৫টি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম
বর্তমান ডিজিটাল যুগে স্মার্টফোন আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য একটি যন্ত্রে পরিণত হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ, অনলাইন ব্যাংকিং, অফিসিয়াল কাজ কিংবা বিনোদন—সবকিছুই এখন স্মার্টফোনে নির্ভরশীল। তবে এই সুবিধার পাশাপাশি আমাদের সামনে দাঁড়িয়ে আছে এক বড় হুমকি—সাইবার নিরাপত্তা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্মার্টফোনের মাধ্যমে ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করার উদ্দেশ্যে প্রতিনিয়ত চালানো হচ্ছে নানা ধরনের সাইবার আক্রমণ। তবে কিছু সহজ নিয়ম মানলে স্মার্টফোনকে অনেকটাই নিরাপদ রাখা সম্ভব।

চলুন জেনে নেই সেই ৫টি গুরুত্বপূর্ণ সুরক্ষা কৌশল:
✅ ১. প্রতি সপ্তাহে অন্তত একবার ফোন রিস্টার্ট করুন
সাইবার নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা পরামর্শ দেন, সপ্তাহে একবার ফোন সম্পূর্ণ বন্ধ করে কিছুক্ষণ পর পুনরায় চালু করা উচিত। এটি বিশেষভাবে কার্যকর ‘জিরো-ক্লিক এক্সপ্লয়েট’ নামক হ্যাকিং পদ্ধতির বিরুদ্ধে। এই ধরনের হ্যাকে ব্যবহারকারীর কিছু না করলেও দূর থেকে ডিভাইস হ্যাক করা সম্ভব হয়।
👉 টিপস:
ফোন বন্ধ করে অন্তত ১০ সেকেন্ড অপেক্ষা করুন।
অপারেটিং সিস্টেম ও অ্যাপ নিয়মিত আপডেট রাখুন।
✅ ২. অপ্রয়োজনীয় ব্লুটুথ বন্ধ রাখুন
ব্লুটুথ চালু থাকলে ডিভাইস সহজে হ্যাকারদের টার্গেট হতে পারে, বিশেষ করে জনবহুল এলাকায়।
👉 করণীয়:
প্রয়োজন না থাকলে ব্লুটুথ বন্ধ রাখুন।
ফোনের ব্লুটুথ নাম সাধারণ রাখুন যেমন—Device123, যাতে শনাক্ত করা কঠিন হয়।
✅ ৩. পাবলিক ইউএসবি চার্জার ব্যবহার না করাই ভালো
হোটেল, শপিংমল বা এয়ারপোর্টে থাকা উন্মুক্ত ইউএসবি চার্জিং পোর্ট ব্যবহার করলে ফোনে ‘জুস জ্যাকিং’ নামক সাইবার আক্রমণের শিকার হওয়া সম্ভব। এতে হ্যাকাররা ফোনে ম্যালওয়্যার প্রবেশ করাতে পারে বা ডেটা চুরি করতে পারে।
👉 করণীয়:
সবসময় নিজস্ব চার্জার বা পাওয়ার ব্যাংক ব্যবহার করুন।
ইউএসবি ডেটা-ব্লকার ক্যাবল ব্যবহার করা আরও নিরাপদ।
✅ ৪. পাবলিক ওয়াই-ফাই ব্যবহারে সতর্কতা অবলম্বন করুন
ফ্রি ওয়াই-ফাই সবসময় নিরাপদ নয়। অনেক সময় হ্যাকাররা ভুয়া নেটওয়ার্ক তৈরি করে ব্যবহারকারীদের ফাঁদে ফেলে।
👉 করণীয়:
নেটওয়ার্কে যুক্ত হওয়ার আগে আসল ওয়াই-ফাই আইডি নিশ্চিত করুন।
সম্ভব হলে VPN (Virtual Private Network) ব্যবহার করুন।
✅ ৫. ক্যামেরা ও মাইক্রোফোনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন
হট-মাইকিং বা স্পাই অ্যাপ ব্যবহার করে হ্যাকাররা গোপনে মাইক্রোফোন চালু করে কথোপকথন শুনে ফেলতে পারে।
👉 করণীয়:
অ্যাপ পারমিশনগুলো নিয়মিত পর্যালোচনা করুন।
ক্যামেরা কভার ও মাইক্রোফোন ব্লকার ব্যবহার করুন।
🔒 শেষ কথা:
স্মার্টফোন শুধু যোগাযোগের মাধ্যম নয়, বরং এটি এখন আপনার ব্যক্তিগত ডেটা ও আর্থিক লেনদেনের কেন্দ্র। তাই ছোট ছোট সচেতনতা আপনাকে বড় ধরনের সাইবার ঝুঁকি থেকে রক্ষা করতে পারে। নিয়মিত আপডেট, নিরাপদ ব্যবহার এবং সতর্কতা—এই তিনেই রয়েছে ডিজিটাল নিরাপত্তার চাবিকাঠি।